এলার্জি দূর করার উপায় – এলার্জি ঔষধ এর নাম
মানুষের শরীরে এমন অনেক ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে যা রোগ হিসেবে মনে না করা হলেও রোগের চেয়ে অনেক বেশি চিন্তা দিয়ে থাকে। এমনই একটি সমস্যার নাম হচ্ছে এলার্জি। এলার্জি নামটি শুনলে অনেক সাধারণ কথা মনে হলেও এটি অনেক সময় রোগীকে অনেক ভয়াবহ সমস্যার সম্মুখীন করে ফেলতে পারে। তাই আমরা অ্যালার্জি দূর করার উপায় নিয়ে আজকে আলোচনা করব।
মানুষ বিভিন্ন গোপন রোগে ভুগে থাকলেও ততটা সমস্যায় পড়ে না। কিন্তু তার ত্বকে কোন সমস্যা হলে মানুষ সেটা নিয়ে অনেক চিন্তিত হয়ে পড়ে। তার একটি বড় সমস্যা হচ্ছে এলার্জি। যার কারণে অনেক মানুষ রোগ নিয়ে চিন্তিত না হলেও অস্বস্তি ও অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। তাই আজকে এই এলার্জি দূর করার উপায় ও ঔষধ নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।
এলার্জি কি?
মূলত এলার্জি হচ্ছে শরীরের বাইরের স্তর অর্থাৎ ত্বকের প্রদাহ। অর্থাৎ ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা ঘা জাতীয় সমস্যা। এটি মূলত দুটি গ্রিক শব্দ Allos ও Ergos এর সমন্বয়ে গঠিত নাম। মানুষের শরীরের ভেতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কোন ভাবে প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হলে মূলত শরীরের বাইরে ত্বকে এলার্জির প্রকাশ ঘটে।
এই অসুস্থ থাকে সাধারণ মনে হলেও অনেকের জন্য এটি অনেক দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। এ রোগের কারণে মানুষের শরীরের ত্বকে গোল গোল চাকার মত লাল লাল দাগ হয়ে থাকে। সাথে সাথে সেখানে মারাত্মক ধরনের চুলকানি হয়ে থাকে। যা মানুষকে অনেক অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দেয়।
এলার্জি কিভাবে হয়?
আমরা আপনাদের সামনে জানবো কিভাবে আসলে এলার্জি হয়ে থাকে। এলার্জি হওয়ার আসলে মূলত প্রধান কারণ হচ্ছে ধুলাবালি। ধুলাবালির কারণেই শরীরে এলার্জি হয়ে থাকে। মাইট নামের এক ধরনের জীবাণু যা ধুলাবালিতে মিশে থাকে তাই আসলে এলার্জি সৃষ্টির জন্য ৬০% দায়ী বলে দাবি করা হয়।
এমনকি বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক এর আক্রমণে ও ছত্রাক আক্রমণ্ডিত খাদ্য গ্রহণ করলে এলার্জি হয়ে থাকে। আর পেনিসিলিন ও এসপিরিন জাতীয় ওষুধ সেবন করলেও এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই সবসময় ঔষধ সেবনের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কি কি খেলে এলার্জি হয়?
এলার্জি মূলত ধুলাবালের কারণে হলেও বিভিন্ন ধরনের খাবার রয়েছে যা খেলে এলার্জি হয়ে থাকে। সেই সকল খাবার গুলো আপনাদের সামনে আমরা তুলে ধরছি। যদি আপনার এলার্জি থেকে থাকে তবে এ সকল খাবারগুলো আপনি এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করবেন। সেগুলো হলো:
- গরুর মাংস
- চিংড়ি মাছ
- ইলিশ মাছ
- বেগুন
- বাদাম
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফুলের রেনু শরীরে রাখলে ও কিছু কিছু ঔষধ সেবন করলেও অ্যালার্জি হয়ে থাকে।
এলার্জি দূর করার উপায়
সাধারণ রোগ মনে হলেও কখনো কখনো এটি একটি মারাত্মক রোগ হয়ে উঠতে পারে। এটি এমন একটি রোগ যা মানুষের শরীরে প্রচুর পরিমাণে অস্বস্তি কর অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে এমনকি চুলকানি সৃষ্টি করে। এলার্জি দূর করার জন্য বিভিন্ন রকমের উপায় রয়েছে। তার মধ্যে একটি আরও প্রাকৃতিক উপায় ও আরেকটি হচ্ছে ওষুধ সেবনের মাধ্যমে।
আমরা আপনাদের মাঝে দুটি ধাপেই তুলে ধরব এলার্জি দূর করার উপায় গুলো। প্রথমে আপনাদের সামনে আমরা তুলে ধরবো প্রাকৃতিক উপায়ে অ্যালার্জি দূর করার টেকনিক। এরপর আমরা আপনাদের সামনে দেখাবো এলার্জি দূর করার জন্য কিছু ঔষধ। তা সেবন করার মাধ্যমে আপনি এলার্জি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। চলুন তাহলে সেগুলো একবার ভালোভাবে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।
এলার্জি দূর করার প্রাকৃতিক উপায়
সাধারণ মনে হয় এই জটিল এলার্জি রোগটি বাড়িতে বসে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপায়ের মাধ্যমে দূর করা সম্ভব। এজন্য শুধু জানতে হবে কি কি প্রাকৃতিক বস্তু দিয়ে এলার্জি দূর করা যায় এবং সেগুলো ব্যবহার করলেই এলার্জি দূর করা সম্ভব। চলুন এবার দেখে নেওয়া যাক প্রাকৃতিক উপায় এলার্জি দূর করার উপায় গুলো:
- বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ও ফলমূলে বায়োফ্ল্যাবনয়েড নামক এক ধরনের যোগ্য থাকে যা এলার্জি দূর করতে সক্ষম। তাই এলার্জি হয় এমন শাক সবজি বাদ দিয়ে অন্য সকল শাকসবজি বেশি বেশি খাওয়া।
- বিভিন্ন ধরনের গাছের ছাল ও ফলের খোশায় এলার্জি দূর করার উপাদান রয়েছে। তার মধ্যে একটি হল কমলালেবুর খোসা।
- আনারস থেকে পাওয়া ব্রোমেলিন নামক রাসায়নিক এলার্জি দূর করতে দারুন কাজে দেয়।
- ভিটামিন সি জাতীয় খাবার গ্রহণ করলে যেমন: কাঁচামরিচ, লেবু, মাল্টা এগুলো খেলে এলার্জি দূর হয়।
- ভিটামিন এ জাতীয় খাবারও এলার্জি দূর করতে ভালো কাজে দেয়।
- এছাড়াও কুচিলা পাতা গাছও এলার্জি দূর করতে ভালো ফল দেয়।
- এমনকি শুকনো নিমপাতা গুড়ো করে পানির সাথে মিশিয়ে খেলে এলার্জি অনেক দ্রুত দূর হয়।
এলার্জি ঔষধ এর নাম
অনেক সময় রোগটি বেশি হয়ে গেলে প্রাকৃতিক উপায়ে দূর করা অনেক কষ্ট হয়ে যায়। কেননা প্রাকৃতিক উপায়ে এলার্জি দূর করতে একটু সময় দিতে হয়। কিন্তু যেহেতু এটি একটি অস্বস্তিকর রোগ যার কারণে অনেকে একটি অতি দ্রুত ফল পাওয়ার চেষ্টা করে। আর তার জন্য অবশ্যই আপনাকে ঔষধ সেবন করতে হবে। এলার্জির সেই ঔষধ গুলো হলো:
- এই এলার্জি রোগ দূর করতে সাধারণত এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা হয়। যদি এলার্জির লক্ষ্য দেখা দেয় বা লক্ষ দেখা দেওয়ার অবস্থা হয়ে ওঠে তখনই এই অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধ সেবন করতে হয়।
- এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধ গুলো সাধারণত ট্যাবলেট, সিরাপ ও ড্রপ হয়ে থাকে। এ ঔষধগুলো সেবন করলে অতিরিক্ত ঘুম বা মাথা ঝিমঝিম করার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই ওষুধ সেবনের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
- এলার্জির জন্য নাকের সমস্যা হলে ড্রপার ইউজ করা যায়। তবে তা এক সপ্তাহের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে করে সমস্যাটি আবার ফিরে আসতে পারে।
- অতিরিক্ত চুলকানি হলে ক্যালামাইন লোশন এবং ১% মেন্থল ক্রিম ব্যবহার করা যায়। এতে করে চুলকানি কমে যায়।
- এছাড়াও এলার্জি বেশি হয়ে গেলে স্টেরয়েট জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করলে তার দ্রুত সেরে যায়। কিন্তু এই ওষুধে তার সাথে অনেক বেশি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
তাই এলার্জি সমস্যার জন্য যে কোন প্রকার ঔষধ সেবনের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। ইন্টারনেট অথবা ফার্মেসিতে গিয়ে সরাসরি ঔষধ কিনে সেবন করে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে পারেন। যা পরবর্তীতে আপনার বড় সমস্যা হতে পারে।
Read More: